গাবুরা, শ্যামনগর প্রতিনিধি:
বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সীগঞ্জ, নওয়াবেকী, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা, যাত্রা পথে গুরুত্বপূর্ণ নীলডুমুর খেয়াঘাটে নেই কোন যাত্রীছাউনি। গাবুরা থেকে শ্যামনগর সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে গেলে পার হতে হয় এই নীলডুমুরের প্রধান খেয়াঘাট দিয়ে। দূর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীসহ শিক্ষার্থীদের। খেয়াঘাটের টোল আদায় করার জন্য একটি ছোট পাতার ছাউনি থাকলেও সেটারও অবস্থা জীর্ণশীর্ণ দেখার কেউ নাই। প্রতিদিন এই খেয়াঘাট দিয়ে আনুমানিক ২-৩ হাজার যাত্রীসহ বিভিন্ন শিক্ষক শিক্ষার্থী পারাপার হয়।
নীলডুমুর খেয়াঘাটে এসে নৌকা বা ট্রলার অপেক্ষায় দাড়িয়ে থাকতে হয় সকলকে। যার ফলে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে বিভিন্ন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন যাত্রীরা। সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় বৃদ্ধ, মহিলা, শিশু, শিক্ষক শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের।
কথা হয় বুড়িগোয়ালিনী ফরেষ্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রহিমা খাতুনের সঙ্গে তিনি বলেন, গাবুরা ইউনিয়নে ২টা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকলেও সেটা আমার বাড়ি ছাড়া অনেক দূরে। তাই বুড়িগোয়ালিনী হাইস্কুলে পড়তে যাইতে হয়। কিন্তু ডুমুরিয়া খেয়াঘাটে এসে পারাপারের জন্য দীর্ঘ সময় দাড়িয়ে থাকতে হয়। এখানে এসে বসার নেই যাত্রী ছাউনি। রোদ বৃষ্টি হলে যাত্রী ছাউনি না থাকায় পার্শ্ববর্তী দোকানে আশ্রয় নিতে গেলে অনেক সময় নৌকা ছেড়ে দেয় সে কারণে অনেক বেশি সমস্যায় পড়তে হয় আমাদের। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পৌঁছাতে পারিনা আমরা।
যাত্রীরা বলেন, খেয়াঘাটে যাত্রী ছাউনি না থাকায় পারাপারে ভোগান্তি পোহাতে হয়। এখানে একটা যাত্রী ছাউনি থাকলে রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজতে হতো না। সকল যাত্রীদের বসার জন্য ভালো সুবিধা হয়়।
খেয়াঘাটের টোল আদায়কারী মোহর আলী মোল্ল্যা বলেন, যাত্রী ছাউনির জন্য বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের জানানো হয়েছে কিন্তু তারা এখনো পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা করলো না। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ্যের কাছে আমি আবেদন জানাই যেন দ্রুত নীলডুমুর খেয়াঘাটে একটি যাত্রী ছাউনির ব্যবস্থা করেন।
গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জি এম মাসুদুল আলমের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ডুমুরিয়া খেয়াঘাটে যদি যাত্রী ছাউনি করার মত পর্যাপ্ত জায়গা থাকে তাহলে আমি ওখানে যাত্রী ছাউনি করে দিবো।
এই বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলনের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ ব্যর্থ হলে কথা হয় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ উজ জামান সাঈদের সাথে তিনি জানান, জেলা পরিষদ এটার ইজারা দেয় যারা রাজস্ব নেয় তাদের অবশ্যই এ বিষয় টি দেখা উচিৎ। যাত্রীদের সুবিধার্থে গাবুরা ও বুড়িগোয়ালিনী খেয়াঘাটের যাত্রী ছাউনি নির্মান করা উচিৎ বলে আমি মনে করি। এবিষয়ে জেলা পরিষদে আমরা উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানাবো।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আক্তার হোসেন বলেন, যেহেতু নীলডুমুর খেয়াঘাটটি জেলা পরিষদের আওতাভুক্ত এই বিষয়ে আমি জেলা পরিষদের মাসিক সভায় উপস্থাপন করবো।
জেলা পরিষদ সদস্য গোলাম মোস্তফা (বাংলা) বলেন, এসব গুলো মন্ত্রণালয় স্পেশাল বরাদ্দ দেয়। জেলা পরিষদ বরাদ্দ দিতে পারে না। আমরা অতি দ্রুত নীলডুমুর খেয়াঘাটে একটি ঘাট করবো। ঘাটের দুইপাশে দোকান থাকার কারণে যাত্রী ছাউনি করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরেও ঘাট করার পরে চিন্তাভাবনা করে দেখবো গাবুরা অথবা নীলডুমুর কোথায় একটা যাত্রী ছাউনি করা যায়। এইগুলো প্রকল্প পাঠাতে হয় মন্ত্রণালয়ে, মন্ত্রণালয় এটার অর্থ বরাদ্দ করে। জেলা পরিষদের কাজ হলো প্রকল্প পাঠানো। এটা আমরা রেজিলেশন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো।
Leave a Reply